বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানি এনভিডিয়া
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবে অ্যাপল ও মাইক্রোসফটকে পেছনে ফেলে নতুন রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে এনভিডিয়া। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বাজারে তাদের আধিপত্যের ফলে এই কোম্পানির শেয়ার মূল্যে নাটকীয় বৃদ্ধি ঘটেছে এবং গত ১৮ জুন ২০২৪, মঙ্গলবার এনভিডিয়া বিশ্বের সবচেয়ে দামি কোম্পানির মর্যাদা লাভ করেছে।
এনভিডিয়ার শেয়ার মূল্য ৩.৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৩৫.৫৮ ডলারে পৌঁছেছে, যার ফলে কোম্পানিটির বাজারমূল্য বর্তমানে ৩.৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার। মূলত ভিডিও গেমসের জন্য চিপ নির্মাতা হিসেবে পরিচিত এই কোম্পানির শেয়ারের দাম প্রযুক্তি খাত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দিকে ঝুঁকে পড়ায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
১৯৯৩ সালে আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ায় প্রতিষ্ঠিত এনভিডিয়া একটি বহুজাতিক ও প্রযুক্তি কোম্পানি। ক্যালিফোর্নিয়ার সান্তা ক্লারায় কোম্পানির সদরদপ্তর অবস্থিত। এনভিডিয়ার সহপ্রতিষ্ঠাতা জেনসেন হুয়াং বর্তমানে কোম্পানিটির প্রেসিডেন্ট ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) দায়িত্ব পালন করছেন।
এনভিডিয়া মূলত গ্রাফিক্স প্রসেসিং ইউনিট (জিপিইউ) এবং সিস্টেম অন এ চিপ (এসওসি) ডিজাইন ও উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। গেমিং, পেশাদার ভিজ্যুয়ালাইজেশন এবং ডেটা সেন্টারসহ বিভিন্ন খাতে তাদের পণ্যের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আন্তর্জাতিক জিপিইউ বাজারে এনভিডিয়ার একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তবে এনভিডিয়ার জিপিইউগুলো কেবল উচ্চমানের গ্রাফিক্স তৈরির জন্যই নয়, বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই), মেশিন লার্নিং এবং ডিপ লার্নিংয়ের মতো বিভিন্ন কম্পিউটিং কাজকে দ্রুত সম্পাদনের জন্যও ব্যবহৃত হয়।
২০০৬ সালে এনভিডিয়া এআই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং এআই ক্ষেত্রে উদ্ভাবন ও গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। এআই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর থেকে এনভিডিয়ার শেয়ার মূল্যে অভাবনীয় বৃদ্ধি ঘটেছে।
প্রযুক্তি খাতে এনভিডিয়ার প্রভাব
এনভিডিয়ার দ্রুত বর্ধমান শেয়ার মূল্য কেবল তাদের উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্যের প্রমাণই নয়, বরং এটি প্রযুক্তি খাতে তাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাবেরও পরিচায়ক। জিপিইউ নির্মাণে এনভিডিয়ার দক্ষতা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধির ফলে তারা বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হয়েছে।
ভবিষ্যতের পথচলা
এনভিডিয়া কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং মেশিন লার্নিংয়ের ক্ষেত্রে তাদের গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে ভবিষ্যতের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তাদের উদ্ভাবনী চিপ ডিজাইন এবং কম্পিউটিং দক্ষতার ফলে আগামী দিনগুলোতে তারা প্রযুক্তি জগতে নতুন নতুন উচ্চতায় পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানি হিসেবে এনভিডিয়ার এই সাফল্য কেবল তাদের নয়, বরং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং আধুনিক প্রযুক্তির নতুন সম্ভাবনাগুলোরও দ্বার উন্মোচন করেছে।